Breaking News

আওয়ামী লীগের সঙ্গে জাতিসংঘের বৈঠক

বাংলাদেশের চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে বিশ্লেষণ করতে জাতিসংঘের তিন সদস্যের প্রতিনিধি দল ঢাকায় এসেছে। ১৫ জানুয়ারি থেকে ২৩ জানুয়ারি পর্যন্ত চলা এই সফরে দলটি নির্বাচন কমিশনসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বৈঠক করবে। জাতিসংঘের প্রতিনিধি দলের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তারা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে ভবিষ্যৎ নির্বাচনে সহায়তার বিষয়টি মূল্যায়ন করবে।

জাতিসংঘের প্রতিনিধিরা নির্বাচনী পরিবেশ, নির্বাচন কমিশনের কার্যক্রম এবং রাজনৈতিক দলগুলোর ভূমিকা বিশ্লেষণ করছেন। সফরের প্রথম দিন তারা নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বৈঠক করেন। জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী গোয়েন লুইস জানান, নির্বাচনের তারিখ বা প্রক্রিয়া নিয়ে জাতিসংঘ কোনো মন্তব্য করবে না। এটি সম্পূর্ণভাবে বাংলাদেশের সরকার এবং রাজনৈতিক দলগুলোর সিদ্ধান্ত।

তিনি বলেন, “বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচনের সময় ও প্রক্রিয়া নির্ধারণ করবে নির্বাচন কমিশন ও সরকার। আমরা তাদের পাশে থেকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দিতে প্রস্তুত।”

ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর আওয়ামী লীগ সরকার নানা চাপের মধ্যে রয়েছে। দলটির বিরুদ্ধে গুম, খুন এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছে। দেশব্যাপী দলটির অনেক নেতাকর্মীর উপস্থিতি কমে গেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এমনকি শেখ হাসিনাসহ দলের শীর্ষ নেতাদের দেশের বাইরে যাওয়ার গুঞ্জনও শোনা যাচ্ছে।

গণঅভ্যুত্থানের পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুস ঘোষণা করেছেন, চলতি বছরের ডিসেম্বর অথবা আগামী বছরের জুনের মধ্যে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজন করা হবে।

আওয়ামী লীগের সঙ্গে জাতিসংঘের বৈঠক কূটনৈতিক অঙ্গনে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে। অনেকেই মনে করছেন, এই বৈঠক আওয়ামী লীগের ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক কৌশল এবং আন্তর্জাতিক মিত্রদের মনোভাব বুঝতে সহায়ক হবে।

২০১৪ সালের বিতর্কিত নির্বাচনের পর জাতিসংঘ কার্যত বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে সহযোগিতা বন্ধ করে দেয়। ২০১৮ সালের নির্বাচনে সীমিত সহায়তা দেওয়া হলেও সে সময়ও নানা বিতর্ক দেখা দেয়। তবে আসন্ন নির্বাচনে জাতিসংঘের পূর্ণ সহযোগিতা পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

বিশেষ করে, ২০ জানুয়ারি থেকে শুরু হওয়া ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রমে কারিগরি সহায়তা দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে জাতিসংঘ।

আন্তর্জাতিক মহল বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। আওয়ামী লীগের মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ, বিরোধী দলের ওপর নিপীড়ন এবং স্বচ্ছ নির্বাচনের দাবি আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সমালোচিত হয়েছে। জাতিসংঘের এই পর্যবেক্ষণ সফর নির্বাচনের আন্তর্জাতিক গ্রহণযোগ্যতা এবং স্বচ্ছতার জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

জাতিসংঘের এই বৈঠক বাংলাদেশের রাজনীতির জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত। আওয়ামী লীগ, বিএনপি এবং অন্যান্য রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জাতিসংঘের আলোচনার ফলাফল দেশটির ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক দিক নির্ধারণে বড় ভূমিকা রাখবে। জাতিসংঘের এই পদক্ষেপ দেশব্যাপী নতুন আশার সঞ্চার করেছে, যদিও রাজনৈতিক অঙ্গনে সংশয়ও কম নয়।

About Atn24news

Check Also

খালেদা জিয়ার গাড়িবহরে হা’মলা: সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ‘ক্যাশিয়ার’ গ্রে’ফ’তার

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার গাড়িবহরে হামলার ঘটনায় সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের ‘ক্যাশিয়ার’ হিসেবে পরিচিত …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *