সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের ক্যাশিয়ার হিসেবে পরিচিত, তেজগাঁও থানা আওয়ামী লীগের নেতা এবং শরীয়তপুর উপজেলা চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ওরফে মিনতি মোশাররফকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গত বৃহস্পতিবার রাতে গুলশান-১ থেকে তাকে গ্রেফতার করে তেজগাঁও থানা পুলিশ। তার বিরুদ্ধে হত্যাসহ খালেদা জিয়ার গাড়ি বহরে বোমা বিস্ফোরণের মামলাও রয়েছে। ওই মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।
তেজগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোবারক হোসেন জানান, গ্রেফতারকৃত মোশাররফ হত্যা মামলাসহ একাধিক মামলার আসামি। খালেদা জিয়ার গাড়ি বহরে বোমা বিস্ফোরণ ও হামলার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় গতকাল তাকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৭ দিনের রিমাÐ চাওয়া হলে আদালত তিন দিনের রিমাÐ মঞ্জুর করেন।
এর আগে গত সোমবার খালেদা জিয়ার গাড়িবহরে হামলার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে তেজগাঁওয়ে সায়মন নামের এক আওয়ামী লীগ নেতাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গত ৬ এপ্রিল একই মামলায় মতিঝিল থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাব্বির হোসেনকেও গ্রেফতার করা হয়।
প্রসঙ্গত, ২০১৫ সালের এপ্রিলে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপির মেয়র প্রার্থী তাবিথ আউয়ালের পক্ষে প্রচার চালানোকালে খালেদা জিয়ার গাড়িবহরে হামলার ঘটনা ঘটে। দীর্ঘদিন পর ২০২৪ সালের ২২ আগস্ট এ ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়। মামলায় অভিযোগে বলা হয়েছে, আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতাকর্মীরা পরিকল্পিতভাবে খালেদা জিয়ার গাড়িবহরে হামলা চালান।
এদিকে ভাটারায় প্রকাশ্যে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে ভীতি প্রদর্শনের আলোচিত ঘটনার অন্যতম অভিযুক্ত আলিনুর পাভেলকে গত বৃহস্পতিবার রাতে গ্রেফতার করে ডিবি গুলশান বিভাগ। ভাটারার জোয়ার সাহারা খাঁ পাড়া এলাকার বাসিন্দা রাশেদুজ্জামান রাজু। গত ১ এপ্রিল রাত ২টার দিকে পূর্ব শত্রæতার জেরে আলিনুর পাভেলসহ অজ্ঞাত ১০-১২ জনের একটি দল প্রাইভেটকারে রাজুর বাসার সামনে গিয়ে অশ্রাব্য ভাষায় গালাগাল করে। তারা দুই রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোড়ে, বাসার গেটে লাথি দেয় এবং সিসি ক্যামেরা ভাঙচুর করে। স্থানীয় লোকজন এগিয়ে গেলে হামলাকারীরা খুন-জখমের হুমকি দিয়ে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় ভাটারা থানায় একটি মামলা হয়েছে। মামলাটি তদন্তকালে ডিবি-গুলশান বিভাগ বাড়ির আশপাশের সিসি ক্যামেরা ফুটেজ পর্যালোচনা করে ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে দুষ্কৃতিকারীদের শনাক্ত করে।
এর আগে বৃহস্পতিবার পৃথক অভিযান চালিয়ে বিভিন্ন মামলায় আওয়ামী লীগ ও নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের ছয় নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এর মধ্যে রয়েছেন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী প্রয়াত সাহারা খাতুনের ভাতিজা এবং মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের আইনবিষয়ক সম্পাদক আনিসুর রহমান, ঢাকা দক্ষিণের ৫০ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী যুবলীগের সভাপতি মো. আরিফ হোসেন, ঢাকা মহানগরের ২০ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি শাহাবুদ্দিন, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর মো. শাখাওয়াত, নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্যার এ এফ রহমান হল শাখার সহসভাপতি বাপ্পি রায়হান। তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে।