Breaking News

মধ্যরাতে তিস্তার পানি ভাসিয়ে নিচ্ছে ঘর-বাড়ি, আতঙ্কিত মানুষ ছুটছে নিরাপদ আশ্রয়ে

মধ্যরাতে তিস্তার পানির তাণ্ডবে দুকূলের চরাঞ্চল এবং নিম্নঞ্চলের বাসা বাড়ি হুহু করে তলিয়ে যাচ্ছে। বাসা বাড়িতে উঠেছে কোমর পর্যন্ত পানি। তলিয়ে গেছে আমন সহ শাকসবজির আবাদ। আতঙ্কিত মানুষজন নিরাপদ আশ্রয়ে ছুটছে। ভেসে গেছে পুকুরের মাছ। যাতায়াত ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। ভারতের গাজলডোবা গেটের সবকটি গেট খুলে দেয়া এবং ভারি বৃষ্টিপাতের কারণে উজানের পানি আছড়ে পড়েছে তিস্তার বাংলাদেশের ডালিয়া ব্যারেজ পয়েন্টে। ফলে এই বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে ব্যারেজের ৪৪টি জলকপাট খুলে দিয়েও কোনো কূল কিনারা করতে পারছে না পানি উন্নয়ন বোর্ড-পাউবো। ডালিয়া ব্যারেজের পূর্ব পার্শ্বে ফ্লাড বাইপাসের উপর দিয়েও বইছে তিস্তার পানি। যে কোনো মুহূর্তে তা ভেঙে দেয়া হতে পারে। পরিস্থিতি সামাল দিতে অববাহিকায় রেড অ্যালার্ট জারি করেছে প্রশাসন। মাইকিং করে সতর্ক করা হচ্ছে অববাহিকার দুই পাড়ের বাসিন্দাদের।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের উত্তরাঞ্চলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আহসান হাবিব জানান, উজানে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ এবং সিকিমে ভারী এবং অতি ভারী বৃষ্টি এবং বাংলাদেশে বৃষ্টির কারণে তিস্তা পানি বৃদ্ধি পেয়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের এই ঊর্ধ্বতন ও কর্মকর্তা আরো জানান, ডালিয়া ব্যারেজ পয়েন্ট এর সবকটি জল কপাট খুলে দেয়া হয়েছে। তবুও সামাল দেয়া যাচ্ছে না পানি। এরই মধ্যে ফ্লাড বাইপাসপর উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলেফ্ল্যাট বাইপাস্টটি কেটে দেয়া হতে পারে। এছাড়াও মাইকিং করিয়ে তিস্তা অববাহিকার মানুষদের নিরাপদে আশ্রয়ে চলে যাওয়ার নির্দেশনা দেয়া হচ্ছে। এরই মধ্যে তিস্তা অববাহিকায় অনেক বাসা বাড়ি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ সব স্থানে কোমর পানি তলিয়ে গেছে। নিরাপদ আশ্রয় নেয়ার জন্য তৈরি করে রাখা হয়েছে বোর্ড।

তত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আহসান হাবিব আরও জানান, এমন পরিস্থিতিতে আগামী ২৪ ঘণ্টায় তিস্তার পাশাপাশি ব্রহ্মপুত্র, ধরলা ও দুধকুমার নদীসমূহের পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে। ফলে লালমনিরহাট, নীলফামারি, রংপুর, কুড়িগ্রাম জেলার এসব নদীসংলগ্ন এলাকা প্লাবিত হয়ে পড়েছে।

আবহাওয়া অফিসের তথ্য মতে, গত ২৪ ঘণ্টায় পশ্চিমবঙ্গের দার্জিলিংয়ের ২৬১ মিলিমিটার, কোচবিহারে ১৯০ মিলিমিটার জলপাইগুড়িতে ১৭২ মিলিমিটার, পশ্চিমবঙ্গে ১৩৪ মিলিমিটার, অরুণাচলে ৮৯ মিলিমিটার এবং গ্যাংটক সিকিমে ৮৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। এই সময়ে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে পঞ্চগড়ে ১১৮, ডালিয়ায় ৮৫, কুড়িগ্রামের পাটেশ্বরীতে ৭৬, রংপুরে ২৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে।

রংপুর আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ মোস্তাফিজার রহমান জানান, আগামী ২৪ ঘণ্টায় উজানে ভারতসহ রংপুর বিভাগে ভারিসহ অতি ভারী বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

বিভাগীয় কমিশনার শহিদুল ইসলাম জানিয়েছেন, তিস্তা নদীতে পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় পাঁচ জেলার জেলা প্রশাসন এবং উপজেলা প্রশাসন মাইকিং করে সতর্ক করছেন এলাকাবাসীকে। তাদের নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেয়া হচ্ছে।

তিস্তা পানি পানি বৃদ্ধি পাওয়া এবং অন্যান্য জেলাগুলোর নদ নদী গুলোতে পানি বৃদ্ধির আশংকায় সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসক, উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা এবং প্রকল্প কর্মকর্তাদের ইতোমধ্যেই পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য সকল প্রস্তুতি নেয়ার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। যারা পানিবন্দি হয়ে পড়বেন তাদের দ্রুতগতিতে উঁচু স্থানে আশ্রয় কেন্দ্রে নেয়ার ব্যবস্থা করবেন তারা। পানিবন্দি মানুষের তাৎক্ষণিকভাবে খাবারও দেয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

সূত্র: যমুনা টিভি

About Atn24news

Check Also

ব্রেকিং নিউজ: ঢাকায় আসছেন ড. জাকির নায়েক, জানা গেল তারিখ

খ্যাতিমান ইসলামী চিন্তাবিদ ও বক্তা ডা. জাকির নায়েক প্রথমবার বাংলাদেশে আসছেন। আগামী নভেম্বরে তিনি ‘মেগা …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *