তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মাহফুজ আলম বলেছেন, সরকার থেকে যেকোনো সময় চলে যাওয়া লাগতে পারে। তবে সাংবাদিকতা সুরক্ষা আইন হবে, এটা নিশ্চিত করে বলতে পারি। আমলারা কাজের গতি স্লো করে দিয়েছে। তারা বসে আছে পরবর্তী সরকারের জন্য।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনা ১০ টাকা কেজিতে চাল খাওয়াবে বলে ছয় মাস ধরে চাল মজুদ করে রেখেছিলেন একজন সচিব। রোববার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে‘গণমাধ্যমের স্বনিয়ন্ত্রণ ও অভিযোগ ব্যবস্থাপনা’ শীর্ষক এক গোল টেবিল বৈঠকে উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।
সেন্টার ফর গভর্নেন্স স্টাডিজের উদ্যোগে আয়োজিত অনুষ্ঠানে উন্নয়নের মধ্যে বক্তব্য রাখেন গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের সাবেক প্রধান সাংবাদিক কামাল আহমেদ, বিএনপি’র মিডিয়া সেল’র আহ্বায়ক মওদুদ হোসাইন আলমগীর পাভেল, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ও মিডিয়া উইং এর প্রধান এহসান উল মাহবুব জুবায়ের, বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও বিএফইউজের সাবেক সভাপতি এম আব্দুল্লাহ, এনসিপির জোবায়েরুল হাসান আরিফ, গণফোরামের অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, গনঅধিকার পরিষদের রাশেদ খান, এবি পার্টির ব্যারিস্টার নাসরিন সুলতানা মিলি, বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দলের নাজমুল হক প্রধান, সিপিবির আব্দুল্লাহ আল কাফি রতন, জি-৯ এর ডা. সাখাওয়াত হোসাইন সায়ান্ত, সাংবাদিক সোহরাব হাসান, সাংবাদিক কাজী জেসীন, জাইমা ইসলাম প্রমূখ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সিজিএস’র সভাপতি সাংবাদিক জিল্লুর রহমান।
বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠকের বিষয় ইঙ্গিত করে তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম বলেন, গত জুন মাসের লন্ডন বৈঠকের পর থেকে দেশের রাজনৈতিক ল্যান্ডস্কেপ একদিকে চলে গেছে। গত এক মাস থেকে মিডিয়া পাড়াসহ বিভিন্ন জায়গায় গুঞ্জন শোনা যাচ্ছিল ছাত্র উপদেষ্টারা পদত্যাগ করবেন। তারপর থেকে ছাত্র উপদেষ্টাদের মন্ত্রণালয়ে কাজের প্রতি স্লো হয়ে গেছে।
তিনি বলেন, ৫ আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানের পর বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী ভাগ-বাটোয়ারা করে প্রশাসন দখল করেছে। গণমাধ্যম এখনো ব্যবসায়ীদের স্বার্থ রক্ষায় কাজ করছে বলেও মনে করেন তিনি।
মাহফুজ আলম বলেন, গণমাধ্যমকে সব গোষ্ঠী স্বার্থের ঊর্ধ্বে উঠে জাতীয় স্বার্থকে প্রাধান্য দিতে হবে। তবে এ সবই নির্ভর করছে রাজনৈতিক দলগুলোর সদিচ্ছা ও ঐকমত্যের ওপর। উপদেষ্টা বলেন, সিভিল মিলিটারি আমলাতন্ত্রকে ফ্যাসিস্ট মুক্ত না করে মিডিয়াকে ফ্যাসিস্টমুক্ত করা সম্ভব নয়। সেই সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোকে মত প্রকাশের স্বাধীনতায় বাধা না দেওয়ারও আহ্বান জানান তিনি।
বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক, বিশিষ্ট সাংবাদিক নেতা আব্দুল্লাহ বলেন, ২৬৬ জন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দেয়া হয়েছে বলে ডেইলি স্টার পত্রিকায় যে খবর বেরিয়েছে তা পুরোপুরি মিথ্যা এবং ভিত্তিহীন। তিনি বলেন অনুষ্ঠানে প্রথম আলোর সোহরাব হাসান এ বিষয়ে উত্থাপন করেছেন। আমি চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলতে চাই, এই পরিসংখ্যান পুরোপুরি অসত্য।
বৈঠকে অন্য বক্তারা বলেন, বিগত সরকারের আমলে গণমাধ্যমে যে অনিয়ম ছিলো- তা থেকে মুক্ত করার সুযোগ থাকলেও অন্তর্বর্তী সরকার তা করেনি। কোনো কোনো গণমাধ্যমের চরিত্র সরকার বদলালে বদলে যায় বলেও মন্তব্য করেন বক্তারা।
সংবাদ প্রকাশে এজেন্সিগুলোর নিয়ন্ত্রণের অভিযোগও করেন আলোচকরা। তারা বলেন, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করা গেলেই হলুদ সাংবাদিকতা কমে আসবে।